ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ৫টি স্তম্ভের একটি হচ্ছে যাকাত।
কিসের উপর যাকাত প্রদান করতে হয়?
চার বস্তুর উপর যাকাত প্রদান করতে হয়। (১) নগদ টাকা (২) ব্যবসায়িক পণ্য (৩) সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা ও (৪) সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ। উল্লেখ্য যে, গরু-মহিষ-উটের উপরও যাকাত আসে যা সাধারণত আমাদের জন্য প্রযোজ্য নয়।যে ব্যক্তির কাছে উপরোক্ত চার বস্তুর পরিপূর্ণ কোন একটি অথবা সবগুলোর কিছু কিছু অংশ মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা যার বর্তমান (আন্তর্জাতিক ও জাতীয়) বাজার দর অনুযায়ী (২০২২ সন) ৪০,০০০/- টাকা সমপরিমান অর্থ এক বছর সময় অতিবাহিত হয়েছে তার উপর যাকাত দেয়া ফরয। অর্থাৎ বছরের শুরুতেও ছিল এবং শেষেও এই পরিমান ছিল।
মোট ৪০ ভাগের এক ভাগ যাকাত দিতে হবে অর্থাৎ ২.৫%। একশত টাকায় আড়াই টাকা, ১,০০০ টাকায় ২৫ টাকা মাত্র। এক লক্ষ টাকায় আড়াই হাজার টাকা ইত্যাদি।
যে নেসাব পরিমান মালের মালিক নয় এবং যার কাছে নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহৃত জিনিসপত্র বাদ দিয়ে বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ৪০,০০০/- টাকা সমপরিমান উদ্বৃত্ত কোন অর্থ বা সোনা-রূপা, ব্যবসায়িক মাল নেই তিনিই যাকাত পাওয়ার উপযুক্ত। তবে যদি তার ঘরে দামী কোন টেলিভিশন, দামী মোবাইল, বিক্রয়যোগ্য গরু অথবা এক টুকরা জমি থাকে (বসবাসের জন্য ব্যবহৃত জমি ব্যতীত) যেটির মূল্য ৪০,০০০/- টাকার চেয়ে অধিক তাকেও যাকাত দিলে যাকাত আদায় হবে না।
নিজ পুত্র-কন্যা, পিতা-মাতা এভাবে উপরের দিকে পিতার পিতা-মাতা, মাতার পিতা-মাতা, তাদের পিতা-মাতা এবং নিচের দিকে পুত্রের পুত্র-কন্যা কিংবা কন্যার পুত্র-কন্যা ইত্যাদি (এরা নেসাব পরিমান মালের মালিক না হলেও এদেরকে যাকাত দেয়া যাবে না)।
যাকাত গরীব-ইয়াতিম-মিসকিনদের হক্ব। নিকটস্থ গরীব ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজনদেরকে যাকাত দেয়া উত্তম। তবে খুব খেয়াল রাখতে হবে যেন আমার যাকাতের টাকা এমন কোন ব্যক্তিকে না দেয়া যে কিনা এই টাকা দিয়ে নেশা করবে, জুয়া খেলবে অথবা কোন হারাম কাজে ব্যবহার করবে। বরং নামাজী, পরহেজগার ও সৎ ব্যক্তিদেরকেই খুজে খুজে যাকাত দেয়া জরুরী। এছাড়াও নিকটস্থ কওমী মাদ্রাসার লিল্লাহ বোডিং এ ইয়াতিম-গরীব ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিশ্চিন্তে আপনার যাকাতের টাকা দিতে পারেন। কেননা তারা এখান থেকে কুরআন-হাদীস শিক্ষা করে ভবিষ্যতে এই শিক্ষার প্রচার-প্রসার ঘটাবে যার সওয়াব সদকায়ে যারিয়া হবে।
0 comments:
Post a Comment